ভারতের জলবায়ুর নিয়ন্ত্রক সমূহ | Describe Indias Climate Controls
ভারতের জলবায়ুর নিয়ন্ত্রক সমূহ | Describe Indias Climate Controls

ভারতের জলবায়ুর নিয়ন্ত্রক সমূহ-
অক্ষাংশগত অবস্থান-
কর্কটক্রান্তি রেখা ভারতের প্রায় মাছ বরাবর বিস্তৃত। এই কারণে ভারতের দক্ষিণাংসে ক্রান্তীয় জলেও দেখা যায়। সমুদ্র লাগো হাওয়ায় ভারতের দক্ষিণভাগের জলবায়ু সমাপন্ন। পর্বতের অবস্থানের কারণে উত্তর ভারতের জলেরু নাতির শীতোষ্ণ প্রকৃতির।
হিমালয় পর্বতের ভূমিকা-
হিমালয় পর্বত ভারতের জলবায়ুকে বিভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।
- অধিক উচ্চতার কারণে উপক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত হওয়া সত্বেও হিমালয়ের জলবায়ু শীতল নাতিশীতোষ্ণ প্রকৃতির। কোন কোন অংশের জলবায়ু অত্যন্ত শীতল।
- হিমালয় পর্বতের অবস্থানের ফলে সুমেরুবৃত্ত থেকে আগত অতি শীতল বায়ু ভারতে প্রবেশ করতে পারে না। শীতকালে ভারত অধিক শহীদের হাত থেকে রক্ষা পায়।
- হিমালয়ের দক্ষিণ ঢলে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাধাপে শৈলোৎক্ষেপ পদ্ধতিতে প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটায়। তাই ভারতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি। হিমালয় পর্বত থাকার কারণে উত্তর-পূর্ব ভারতে বৃষ্টিপাত সবচেয়ে বেশি হয়। উত্তর ভারতে মাঝারি মধ্য ভারতের ও দক্ষিণ ভারতের বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম।
সমুদ্র সান্নিধ্য-
দক্ষিণ ভারতের তিন দিকে সমুদ্র বেষ্টিত হয় উপকূলের জলের সমভাবাপন্ন। উপকূল অঞ্চলের সামুদ্রিক ঘূর্ণবাদে প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটে। অপরদিকে উত্তর ও উত্তর পশ্চিম ভারত সমুদ্র থেকে দূরে অবস্থিত। তাই এই অঞ্চলের সমুদ্র বায়ুর প্রভাব পৌঁছায় না। সিট ও গ্রীসে তাপের তারতম্য বেশি হওয়ায় এই অঞ্চল গুলিতে চরমভাবাপন্ন জলবায়ু অনুভূত হয়। উপকূল থেকে দূরে অবস্থিত হওয়ায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণও কম। তাই ভারতের পশ্চিমে থর মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে।
মৌসুমী বায়ু-
মৌসুমী বায়ু ভারতের জলবায়ুর এক উল্লেখযোগ্য নিয়ন্ত্রক। মৌসুমী বায়ুর ভূমিকা-
- মৌসুমী বায়ু ও উষ্ণতা-
মৌসুমী বায়ুর আগমনের পূর্ব মুহূর্তে উষ্ণতা অত্যন্ত বেশি থাকে। এর আগমনের সাথে সাথে আকাশ মেঘে ঢেকে যায় এবং বৃষ্টি হয় বলে উষ্ণতা গড়ে ৮ ডিগ্রি থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যায়। কুত্তা গমন কালে শুষ্ক শীতল বাতাস ভারতের ওপর দিয়ে বয়ে গেলে এখানকার গড় উষ্ণতা অনেকটা কমে যায়।
- মৌসুমী বায়ু ও বৃষ্টিপাত-
দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু জলবায়ু বাষ্পপূর্ণ। তাই মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের অধিক বৃষ্টিপাত হয়। উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ু শুষ্ক ও শীতল। তাই অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ভারত বর্ষ কম বৃষ্টিপাত লাভ করে।
জেট বায়ু-
শীতকালে ভারত উপমহাদেশ অঞ্চলে উপক্রান্তীয় পশ্চিমী জেট বায়ুর অবস্থানের কারণে এখানে উচ্চচাপ বিরাজ করে। ফলে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে মৌসুমী বায়ুর প্রত্যাগমন করে। গ্রীষ্মকালের তিব্বত মালভূমি অধিক উষ্ণ হয় বলে উপক্রান্তীয় পশ্চিমী জেট বায়ু হিমালয়ের উত্তরে সরে যায়।
ক্রান্তীয় ঘূর্ণাবর্ত্য ও পশ্চিমী ঝঞ্ঝা-
দুর্বল ক্রান্তীয় ঘূর্ণাবর্তে সারা ভারতের উপকূলীয় রাজ্যগুলোতে প্রবল বর্ষণ হয়। এই বর্ষণে কখনো প্রবল বন্যা দেখা দেয়। শরৎ ও শীতকালে প্রবল ক্রান্তীয় ঘূর্ণাবর্তে উপকূল অঞ্চল গুলিতে প্রবল বৃষ্টিপাত হয় যার প্রভাবে প্রচুর ক্ষতি হয়। শীতকালে উত্তর-পশ্চিম ভারতের পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে শীতকালীন শান্ত আবহাওয়ার বিভিন্ন ঘটে। এর প্রভাবে উত্তর পশ্চিম ভারতে একটানা দু-তিন দিন ধরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি এবং পার্বত্য অঞ্চলে তুষারপাত হয়।
সাধারণ অবস্থায় প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বে পেরু ও ইকু এডুয়ার উপকূল বরাবর দক্ষিণ থেকে উত্তরমুখের শীতল পেরু বা হোম বোল্ট স্রোত প্রবাহিত হয়। কোন কোন বছর এই অঞ্চলে উষ্ণ জলের স্রোত অঞ্চলটিকে ঢেকে ফেলে। এই বছরগুলিতে উষ্ণতা বেড়ে গিয়ে এই অঞ্চলের উচ্চচাপ কে দুর্বল করে তোলে। তাই প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব উপকূলের পেরু এর উপকূলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটে। প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমা অস্ট্রেলিয়া ইন্দোনেশিয়া সমেত ভারত মহাসাগরে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলে পেরু, ইকু এডরের ধার দিয়ে প্রবাহিত এই উষ্ণ সতী এল নিল নামে পরিচিত।
আবার কোন কোন বছর পেরু ইকো এডোর উপকূলের উষ্ণতা সাধারণ অবস্থায় চেয়ে বেশি বেশ কিছুটা কমে যায়। সেই সময় প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব উপকূলের এই উষ্ণতা হাসের ঘটনাকে লা নিনা বলে। এর ফলে পূর্ব উপকূলে প্রচুর উচ্চচাপ বিরাজ করে। পূর্ব উপকূলে খরার পাদুর্ভাব ঘটে। এইসব বছরগুলিতে প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমাংশের নিম্নচাপ বিরাজ করে।