আধিপত্যপ্রত্যশীল জাতের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো।

আধিপত্যপ্রত্যশীল জাতের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো।
শ্রীনিবাস ১৯৬২ সালে আধিপত্য সেই জাতের তিনটি বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করেছেন যথা-
১. অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক দিক থেকে ক্ষমতাবান হওয়া
২. উচ্চতার একটি উচ্চ রঙ্গে অবস্থান
৩. সংখ্যা গরিষ্ঠতা
অবশ্য অন্যান্য তাত্ত্বিকদের প্রভাবে ১৯৬৬ সালে পুনরায় তার বক্তব্যের পরিমার্জন ঘটিয়ে আধিপত্যশীল যাদের নিম্নরূপ সাধারণ বৈশিষ্ট্য গুলি উপস্থাপন করেছেন।
১. অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা-
প্রচুর জমির মালিকানা সত্যই একটি জাতির ক্ষমতাকে নির্দেশ করে। যেমন কৃষি ক্ষেত্র থেকে আয় বৃদ্ধি, এরা ভূমিহীন কৃষক বা প্রান্তিক কৃষকদের কে জীবিকা অর্জনের উপযোগী কাজ দিয়ে থাকে বলে এই কৃষকরা এদের অধীনস্থ স্তরে অবস্থান করে। শ্রীনিবাস দাবি করেন এই জমির মালিকানা স্বত্বের সূত্রে ক্ষমতা গত মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
২. জাত কোমোচ্ছতার উচ্চরাইঙ্কে অবস্থান-
ক্রমচয় বিন্যাসের উচ্চ স্তরে জাতগুলি আধিপত্যশীল মর্যাদা ভোগ করছে। প্রসঙ্গত ব্রাহ্মণ এবং রাজপুত যাদের উল্লেখ করা যেতে পারে।
৩. সংখ্যা গরিষ্ঠতা-
অধুনা ভোট ব্যাংকের কারণে একটি জাতের আধিপত্যের ক্ষেত্রে সংখ্যা গরিষ্ঠতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্দেশক। একটি জাত শুধুমাত্র একটি গ্রামে আধিপত্যশীল নয় বরং একগুচ্ছ গ্রামের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার করছে।
৪. প্রচুর জমির মালিকানা-
যারা গ্রামীণ জমির বৃহৎ অংশের উপর দখল রাখছে তারা ব্যাপক ক্ষমতা ও সম্পদ ভোগ করছে। অন্যভাবে বলা যায় ভূমির মালিকানা ক্ষমতা পূর্ণ সম্মানকে প্রভাবিত করে।
৫. আধি আধুনিক ধরনের পেশার সঙ্গে যুক্ত এবং শক্তি সামর্থের অধিকারী। শ্রীনিবাস এর মতে এই কারণে গ্রামের যাবতীয় কর্ম এবং ব্যবস্থাসমূহের উপর এদের প্রভাব বর্তমান।
আধিপত্যশীল জাত সম্পর্কে শ্রীনিবাসের ধারণার সমালোচনায় বলা যায়-
১. এইরূপ জাতগুলি কেবল চিরাচরিত গানগুলিতে বর্তমান।
২. সংখ্যাগরিষ্ঠতা সর্বদা আধিপত্যশীল জাতের নির্দেশক হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না।
৩. সমালোচকদের অনেকেই আধিপত্য সেই জাতের বৈশিষ্ট্যগুলিকে আধিপত্যশীল ভূমিকা সম্পাদনের এক একটি পন্থা হিসেবে গণ্য করেছেন।
৪. অতশীল জাত ধারণাটি শুধুমাত্র কাঠামোগত দৃষ্টিভঙ্গিরই একটা অংশ শুধুমাত্র।
৫. শ্রীনিবাস আধিপত্যসীল যাদের বৈশিষ্ট্যসমূহ কে সেগুলির গুরুত্ব অনুযায়ী কমোচ্ছ স্তরে স্তরায়নের ব্যর্থ।
আজ সিনেবাসের মতে গ্রামীণ সমাজ এমনকি এর বাইরেও আধিপত্যশীল জাতের আধিপত্য বজায় থাকে। সামাজিক জীবনে আধিপত্যশীল জাত বিশেষত অব ব্রাহ্মণ বর্গভুক্ত আধিপত্যশীল জাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষত ধর্মীয় দিক বাদ দিয়ে অন্যান্য সামাজিক ক্ষেত্রগুলিতে এর কর্তৃত্ব মূলক ভূমিকা পালন করে এমনকি বিভিন্ন জাত বা পাশাপাশি গ্রামগুলির সাথে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে এদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। স্বাধীন ভারতের গণতন্ত্র স্বাধীনতা এবং সর্বজনীন ভোটাধিকারের সুবাদে এরা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ক্ষমতালি হয়ে উঠছে। পার্লামেন্ট এবং বিধানসভা গুলিতে এদের যথেষ্টই প্রতিনিধিত্ব পরিলক্ষিত।