অনলাইন পড়াশোনা

পড়াশোনা এখন অনলাইনে

অনলাইন পড়াশোনা

পড়াশোনা এখন অনলাইনে

সমাজতত্ত্ব

কোঠারী কমিশন বা ভারতীয় শিক্ষা কমিশন

কোঠারী কমিশন বা ভারতীয় শিক্ষা কমিশন | Kothari Commission or Indian Education Commission

কোঠারী কমিশন বা ভারতীয় শিক্ষা কমিশন
কোঠারী কমিশন বা ভারতীয় শিক্ষা কমিশন

কোঠারী কমিশন বা ভারতীয় শিক্ষা কমিশন

  • সভাপতি- ড. দীপক সিং কোঠারী
  • সম্পাদক- ড. জে.পি. নায়েক
  • মোট সদস্য- ১৭ জন
  • ভারতী সদস্য- ১০ জন
  • বিদেশী সদস্য- ৭ জন
  • মোট পৃষ্ঠা- ৬৯২টি
  • শিরোনাম – Educational and National Development.

কোঠারী কমিশন (1964-66) বা ভারতীয় শিক্ষা কমিশন

স্বাধীন ভারতের শিক্ষার ইতিহাসে কোঠারী কমিশনের সুপারিশ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন ও মুদালিয়র কমিশনের শিক্ষা ক্ষেত্রে কিছু সংস্কার ও উন্নয়ন ঘটলেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। তার বিশেষ সংস্কার লক্ষ্য করা যায় কোঠারী কমিশনে।

1964 সালে 14 জুলাই ভারত সরকার UGC এর চেয়ারম্যান ড. দৌলত সিং কোঠারীকে সভাপতি নিযুক্ত করে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। কোঠারীর নাম অনুসারে এই কমিশনকে বলা হয় কোঠারী কমিশন বা ভারতীয় শিক্ষা কমিশন। এই কমিটিটি Education & National Development শিরোনামে প্রকাশ করা হয়। এই কমিশনের মোট সদস্য সংখ্যা ছিল 17 জন। তার মধ্যে ভারতীয় সদস্য ছিলেন 10 জন এবং বিদেশী সদস্য ছিলেন 7 জন। কমিশন কাজ শুরু করেন 1964 সালে 2রা অক্টোবর। এই রিপোর্টের মোট পৃষ্ঠা ছিল 692 এবং মূল রিপোর্ট ছিল 489 পৃষ্ঠার। কমিশনের রিপোর্টটি 4 টি খণ্ডে বিভক্ত ছিল।

কমিশনের সদস্যবৃন্দঃ

কমিশনের মোট সদস্য সংখ্যা ছিল 17 জন এর মধ্যে ভারতীয় সদস্যরা হলেন -10 জন যথা-

  • 1. ড. ডি.এস. কোঠারী (সভাপতি)
  • 2. ড. জে.পি. নায়েক (সম্পাদক)
  • 3. ড. বি.পি. পাল – সদস্য
  • 4. ড. টি সেন – সদস্য
  • 5. ড. পি.এন. কিরপল – সদস্য
  • 6. মিস্টার এম.ভি. মাথুর – সদস্য
  • 7. মিস্টার এ.আর. সাদুস – সদস্য
  • 8. মিস্টার আর.এ. গোলাপ স্বামী – সদস্য
  • 9. মিস্টার কুমার এস. পানধিকার – সদস্য
  • 10. ড. কে.জি. সৈয়দ্দিন স্বামী – সদস্য

বিদেশী সদস্যগণঃ

  • 1. মিস্টার জে.এফ. ম্যাকডুগাল
  • 2. ড. ভি.এস. ঝা (UK)
  • 3. মিস্টার এম জেন থমাস (ফ্রান্স)
  • 4. অধ্যাপক সুনভোস্কি (রাশিয়া)
  • 5. অধ্যাপক সদতোশি ইহারা (জাপান)
  • 6. অধ্যাপক রোজার রেভেলি (USA)
  • 7. মিস্টার এইচ এল এলউইন (UK)

এই কমিশন 12 টি Task Force এবং 7 টি Working Group নিয়ে কাজ করে।

কোঠারী কমিশনের লক্ষ্যঃ

  1. এমন বিষয়বস্তুকে শিক্ষায় স্থান দিতে হবে, যে সমস্ত বিষয়গুলি পাঠ করে জাতীয় উৎপাদন বাড়ানো যায়। তাই বিষয় বস্তুগুলিকে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক ভাবে প্রকাশ করতে হবে।
  2. শিক্ষার বিষয়বস্তু হবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাতীয় সংহতি বোধ জাগরণ করা।
  3. শিক্ষার্থীদের নৈতিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে চারিত্রিক বিকাশ ঘটানো।
  4. ভারতীয় শিক্ষার একটি জাতীয় পরিকল্পনা রচনা করা।
  5. আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে সংগতি রেখে বিভিন্ন প্রকারের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। যা সমাজের অগ্রগতি ও আধুনিকরণে সহায়তা করে।
  6. শিক্ষা ক্ষেত্রে সকলের জন্য সম-সুযোগের ব্যবস্থা কর।
  7. কোঠারী কমিশন প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে স্নাতকোত্তর স্তর পর্যন্ত শিক্ষাকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করেছেন।

শিক্ষার সাংগঠনিক কাঠামো-

বয়স-

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
  • 1-3 বছর পর্যন্ত Pre School
  • 3-5 বছর পর্যন্ত প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা
  • 5-6 বছর পর্যন্ত শ্রেণিতে অন্তর্গত করার সময়
  • 6-8 বছর প্রাথমিক শিক্ষাকাল
  • 2/3 বছর নিম্ন মাধ্যমিক
  • +2 বছর উচ্চমাধ্যমিক
  • 3 বছর স্নাতক শিক্ষা
  • 2 বছরের স্নাতকোত্তর শিক্ষা

তবে সামগ্রিকভাবে বলা যায় শিক্ষার কাঠামো হবে- 10 + 2 + 3 + 2 বছরের।

কোঠারী কমিশনের মতে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্যঃ

  1. প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হল শিশুদের মধ্যে শিক্ষার ভিত্তি স্থাপন করা। যা পরবর্তী সময়ে শিক্ষাগত উন্নয়নে সহায়ক হয়।
  2. প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হল শিশুর দৈহিক, মানসিক, সামাজিক অর্থাৎ সর্বাঙ্গীন বিকাশের দিকে লক্ষ্য রাখা
  3. শিশুদের মধ্যে সামাজিক দক্ষতা, সহযোগিতা এবং আবেগীয় বিকাশের জন্য একটি সমন্বিত পরিবেশ প্রদান করা।
  4. শিশুদের মধ্যে সৃজনশীলতা ও কল্পনাশক্তির বিকাশে সয়াহতা করা। যার ফলে শিক্ষার্থীর মধ্যে বিভিন্ন প্রকার নতুন ধারণা ও সমাধান খুঁজে বের করতে পারে।
  5. মৌলিক ভাষা ও যোগাযোগ দক্ষতার উন্নয়ন করা। যাতে শিক্ষার্থীরা স্বয়ং নিজেদের চিন্তা ও অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে।
  6. শৈশবকালে শিশুর আচরণ বিশৃঙ্খল প্রকৃতির হয়। শিশুর আচরণ যাতে সুশৃঙ্খল হয় সেই দিকে লক্ষ্য রাখা প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য।

কোঠারী কমিশনের মতে প্রাক্ প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্যঃ

  1. প্রাক্‌ প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হল শিশুদের মধ্যে শিক্ষার ভিত্তি স্থাপন করা। যা পরবর্তী সময়ে শিক্ষাগত উন্নয়নে সহায়ক হয়।
  2. প্রাক্‌ প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হল শিশুর দৈহিক, মানসিক, সামাজিক অর্থাৎ সর্বাঙ্গীন বিকাশের দিকে লক্ষ্য রাখা।
  3. শিশুদের মধ্যে সামাজিক দক্ষতা, সহযোগিতা এবং আবেগীয় বিকাশের জন্য একটি সমন্বিত পরিবেশ পদান করা।
  4. শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার সামাজিক দক্ষতা, সহযোগিতা এবং সহানুভূতির গুণাবলীর বিকাশ সাধন করা।
  5. শিশুদের মধ্যে সৃজনশীলতা ও কল্পনাশক্তির বিকাশে সহায়তা করা। যার ফলে শিক্ষার্থীর মধ্যে বিভিন্ন প্রকার নতুন ধারণা ও সমাধান খুঁজে বের করতে পারে।
  6. মৌলিক ভাষা ও যোগাযোগ দক্ষতার উন্নয়ন করা। যাতে শিক্ষার্থীরা স্বয়ং নিজেদের চিন্তা ও অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে।
  7. শৈশবকালে শিশুর আচরণ বিশৃঙ্খল প্রকৃতির হয়। শিশুর আচরণ যাতে সুশৃঙ্খল হয় সেই দিকে লক্ষ্য রাখা প্রাক্‌ প্রাথমিক শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য।

কোঠারী কমিশনের মতে প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্যঃ

  1. শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও সামাজিক দায়িত্ববোধ গড়ে তোলা।
  2. প্রাথমিক স্তরে শিশুদের মৌলিক দক্ষতা যেমন- পড়া, লেখা, গণনা শেখানো।
  3. শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সাধন করা। যাতে শিক্ষার্থীরা সুস্থ ও সক্রিয় জীবনযাপন করতে পারে।
  4. শিশুদের মধ্যে যে অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বা নতুন সৃজনশীল ক্ষমতা রয়েছে তার বিকাশ সাধন করা।
  5. শিক্ষার্থীর নিজস্ব সমাজ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতন করা এবং তাদের মধ্যে দেশপ্রেম ও আন্তর্জাতিক সচেতনবোধ গড়ে তোলা।
  6. শিশুদের শিক্ষার জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করা। যাতে তারা পরবর্তী শিক্ষাগ্রহণের জন্য প্রস্তুত হয়।

প্রাথমিক শিক্ষার কাঠামো-

1. প্রাথমিক শিক্ষা-

নিম্ন প্রাথমিক স্তর (4/5 বছর)

(প্রথম শ্রেণি- চতুর্থ/পঞ্চম শ্রেণি)

(3/4 বছর পর্যন্ত)

2. উচ্চ প্রাথমিক স্তর (3/4 বছর)

(পঞ্চম – ষষ্ঠ/সপ্তম শ্রেণি) \

(11-12 বছর)

কোঠারী কমিশনের মতে মাধ্যমিক শিক্ষার উদ্দেশ্যঃ

  1. মাধ্যমিক শিক্ষা শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর একাডেমিক দক্ষতা নয়, বরং ছাত্রদের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই শিক্ষার্থী শুধুমাত্র বৌদ্ধিক বিকাশ নয়, সর্বাঙ্গীণ বিকাশের দিকে লক্ষ্য রাখা।
  2. শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম, সম্প্রদায় সাম্প্রতি এবং মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তোলার জন্য নাগরিকত্বের শিক্ষা প্রদান করা।
  3. শিক্ষার্থীর সামাজিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে চারিত্রিক বিকাশের দিকে লক্ষ্য রাখা।
  4. শিক্ষার মাধ্যমে সামগ্রিক সমাজের উন্নতি সাধন করা। এছাড়া রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা।
  5. শিক্ষায় সমস্ত শিক্ষার্থী যাতে সমান সুযোগ সুবিধা পায় সেই দিকে লক্ষ্য রাখা।
  6. পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা সহজলভ্য করা।

মাধ্যমিক শিক্ষার কাঠামোঃ

মাধ্যমিক শিক্ষা- 2/3 বছর – অষ্টম, নবম, দশম (14-16 বছর পর্যন্ত)

কোঠারী কমিশনের মতে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার উদ্দেশ্যঃ

  1. শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মানব সম্পদ হিসাবে গড়ে তোলা। যাতে তারা সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম হয়।
  2. উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হল সমাজের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে তাদের শিক্ষাকে আধুনিকীকরণ করে তোলা।
  3. উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাকে বৃত্তিমুখী করে তোলার উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তিমুখী শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া।
  4. শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্বের উন্নয়ন, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি এবং সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটানো।
  5. শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃজনশীলতা ও সমালোচনামূলক চিন্তা ভাবনার বিকাশ ঘটানো।

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার কাঠামো-

উচ্চ মাধ্যমিক – একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি – 16-18 বছর

কোঠারী কমিশনের মতে উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্য-

  1. কোঠারী কমিশনের মতে উচ্চ শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য হল- শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক ব্যক্তিত্বের বিকাশ সাধন করা এবং তাদের মানবিক গুণাবলী বৃদ্ধি করা।
  2. দেশের বিভিন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে একতা এবং সাদৃশ্য সৃষ্টি করা।
  3. উচ্চ শিক্ষার মান উন্নয়ন করা এবং শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা।
  4. শিক্ষার্থীদের জীবব্যাপী শিক্ষার মনোভাব গড়ে তোলা।
  5. গবেষণা ক্ষেত্রের সম্প্রসার ঘটানো এবং শিক্ষার মান উন্নয়ন করা।
উচ্চ শিক্ষার কাঠামো-

উচ্চশিক্ষা

A) স্নাতক (প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় বর্ষ)

সময়- 18-21 বছর

B) স্নাতকোত্তর (প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষ)

সময়- 21-23 বছর

স্নাতক স্তরের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সময়কাল হবে তিন বছর এবং স্নাতকোত্তর স্তরের সময়কাল হবে দুই বছর।

এছাড়া শিক্ষার্থীরা কারিগরি ও বৃত্তি শিক্ষা শিখবে এবং এর পাশাপাশি বিভিন্ন সাধারণ ধর্মী কোর্স যেমন- কলা বিভাগ, বিজ্ঞান বিভাগ, বাণিজ্য বিভাগ, চিকিৎসা বিজ্ঞান, আইন, ম্যানেজমেন্ট কোর্স, গ্রন্থাগার, সাংবাদিকতা, সঙ্গীত ও অভিনয়, অঙ্কন কোর্স, টেক্সটাইল, লেদার টেকনোলজি প্রভৃতির কথা কোঠারী কমিশনে বলা হয়েছে।

ajkersornerdam

'ajkersornerdam.com' একটি এডুকেশনাল ব্লগ। এখানে বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক, ইতিহাস, ভূগোল, জীবন বিজ্ঞান, ভৌতবিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজতত্ত্ব, দর্শন, অর্থনীতি, কম্পিউটারসহ যাবতীয় বিষয়ের তথ্য প্রদান করা হয়ে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন রকম প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য নোটস প্রদান করা হয়। সর্বোপরি পড়াশোনা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য প্রদান করাই হলো আমাদের মূল লক্ষ্য। আশা রাখি আমাদের এই উদ্যোগ আপনাদের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে। Contact us : allnewsinbd2@gmail.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *